নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র: জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি পেয়েছে ইতিহাসের প্রথম মুসলিম ও অভিবাসী মেয়র — জোহরান মামদানি। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে এ ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছেন।
জোহরান মামদানি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে লড়েন এবং প্রাপ্ত ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজসহ একাধিক সংস্থা পূর্বেই তাঁর জয়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল।
ভোটে রেকর্ড উপস্থিতি
নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচন বোর্ড (B.O.E.) জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে প্রায় ১৭ লাখ ভোটার অংশ নিয়েছেন — যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি। ভোটগ্রহণ চলে স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
২০২১ সালের নির্বাচনে যেখানে ১১ লাখ ভোট পড়েছিল, এবারের ভোটে সেই সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৬ লাখ। সর্বশেষ ২০০৫ সালে এ সংখ্যা ১৩ লাখ ছাড়িয়েছিল, যখন দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন মাইকেল ব্লুমবার্গ।
ঐতিহাসিক রাত ও জয়ের প্রতিক্রিয়া
নির্বাচনী রাত উদযাপিত হয় ব্রুকলিন প্যারামাউন্টে, যা নিউইয়র্কের অন্যতম ঐতিহাসিক কনসার্ট ভেন্যু। ফল ঘোষণার পর মামদানির সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন।
৩৪ বছর বয়সী এই তরুণ রাজনীতিক বলেন,
“আমাদের রাজনীতিতে নতুন দিন আনার সময় এখনই। এই শহর পরিবর্তনের জন্য আমরা যে আন্দোলন শুরু করেছি, আজ তারই ফলাফল।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“এক লাখের বেশি স্বেচ্ছাসেবী আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাদের কারণেই আজ আমরা নিউইয়র্কে ইতিহাস লিখতে পারছি।”
প্রেক্ষাপট
জোহরান মামদানি মূলত কুইন্স বোরোর অ্যাস্টোরিয়া এলাকায় বসবাস করেন। তিনি একজন অভিবাসী পরিবারের সন্তান এবং নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অ্যাসেম্বলি সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার তিনি বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
অ্যাডামস সেপ্টেম্বরে পুনর্নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও ব্যালটে নাম রেখেছিলেন। ফলে নির্বাচনটি ছিল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের লড়াই হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিক্রিয়া ও তাৎপর্য
বিশ্লেষকদের মতে, জোহরান মামদানির জয় মার্কিন রাজনীতিতে মুসলিম ও অভিবাসী সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক অগ্রগতির বড় মাইলফলক। এটি নিউইয়র্কের বৈচিত্র্যময় সমাজ ও প্রগতিশীল রাজনীতির প্রতিফলন বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কোন মন্তব্য নেই