ক্রিপ্টো বাজারে অস্থিরতা, সোয়া ট্রিলিয়ন ডলার মূলধন হারালো
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
বিশ্বজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বিনিয়োগ কমায় ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে আবারো অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা কমে যাওয়া এবং প্রযুক্তি খাতের অতিমূল্যায়নের উদ্বেগের কারণে বিটকয়েনসহ প্রধান ডিজিটাল মুদ্রার দাম টানা ছয় সপ্তাহ ধরে কমছে। এ সময় ক্রিপ্টো বাজার প্রায় সোয়া ট্রিলিয়ন ডলার মূলধন হারিয়েছে।
এশিয়ার বাজারে লেনদেন চলাকালে বিটকয়েনের দাম ২.১ শতাংশ কমে নেমে এসেছে প্রায় ৮৫,৩৫০ ডলারে, যা গত সাত মাসের সর্বনিম্ন। ইথারের দামও ২ শতাংশের বেশি কমে চার মাসের সর্বনিম্ন ২,৭৭৭ ডলারে পৌঁছেছে। সপ্তাহজুড়ে বিটকয়েন ও ইথারের দাম প্রায় ৮ শতাংশ কমেছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রিপ্টোকারেন্সি এখন বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি সূচকের রূপ নিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বিনিয়োগ কমায় ডিজিটাল মুদ্রার দাম দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। আইজির বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, “বিটকয়েন যদি সামগ্রিক ঝুঁকি মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এটি এখন বড় উদ্বেগের বিষয়।”
বিটকয়েনের দাম কমার প্রভাব পড়েছে ক্রিপ্টো ভিত্তিক ইটিএফগুলোতেও। হংকংয়ে তালিকাভুক্ত চায়না এএমসি, হারভেস্ট ও বোসেরা পরিচালিত স্পট বিটকয়েন ইটিএফের দাম গতকাল প্রায় ৭ শতাংশ কমেছে। কোয়েনগেকো তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় সপ্তাহে পুরো ক্রিপ্টো বাজার প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ডলার (প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার) মূলধন হারিয়েছে।
অক্টোবরের শুরুর দিকে বিটকয়েন ১ লাখ ২০ হাজার ডলার অতিক্রম করে রেকর্ড গড়ে। তবে সম্প্রতি হঠাৎ বড় বিক্রি শুরু হওয়ায় বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। লিভারেজ বিনিয়োগ থাকা অনেক ট্রেডারের লেনদেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে ১,৯০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ একবারে বাজার থেকে হারিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সুদের হার কমানো নিয়ে ফেডের অনিশ্চিত অবস্থান এবং প্রযুক্তি খাতের অতিমূল্যায়ন—all মিলিয়ে ক্রিপ্টো বাজারে চাপ তৈরি করেছে।
ওয়ান্ডার বাজার বিশ্লেষক ক্রিজস্টফ কামিনস্কি বলেন, “বিটকয়েন ভিত্তিক ইটিএফ থেকে মূলধন বের হয়ে যাওয়াই সাম্প্রতিক পতনের অন্যতম কারণ। এতে বিনিয়োগকারীরা তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন।” সুইসকোট ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ইপেক ওজকারদেস্কায়া বলেন, “এখনও স্পষ্ট নয়, বিটকয়েনের পতন স্বল্পমেয়াদি সংশোধন নাকি দীর্ঘমেয়াদি নিম্নমুখী প্রবণতার সূচনা।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে ক্রিপ্টো বাজারের পরবর্তী গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সময় হতে যাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই