‘সংকটজনক পর্যায়ের’ দিকে অগ্রসর হচ্ছে ভেনেজুয়েলা
ভেনেজুয়েলার উদ্বাস্তু পরিস্থিতি তিন বছর আগের ভূমধ্যসাগরীয় ‘সংকটজনক পর্যায়ের’ দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা আইএমও। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইএমও) মুখপাত্র হোয়েল মিলম্যান বলেন, ‘বিশ্বের অন্য অংশে শরণার্থীদের যে দুর্ভোগ আমরা দেখেছি, এখানকার বর্তমান পরিস্থিতিও ওই সংকটময় অবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কঠিন পরিস্থিতি দ্রুত সংকটময় পরিস্থিতির রূপ নেয় এবং এজন্য এখনই আমাদের প্রস্তুত হওয়া উচিত।’
২০১৫ সালে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপমুখী শরণার্থীর ঢল নেমেছিল। যাত্রা পথে ওইসব শরণার্থীদের যে মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তা বিশ্ববাসীর মনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
গত কয়েক বছর ধরে ভেনেজুয়েলায় চরম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফ্রীতি এখন সেখানে। খবর বিডিনিউজের।
চরম খাদ্য সংকটের কারণে অনেক পরিবারকে আবর্জনার স্তূপে খাবার খুঁজতে হচ্ছে। সেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। দৈনন্দিন মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ দেশটির হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের মূললক্ষ্য কলম্বিয়া হয়ে ইকুয়েডর পেরু ও চিলিতে বসবাস করা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হওয়া। যদিও প্রতিবেশী দেশগুলো ভেনেজুয়েলীয় শরণার্থীদের আটকাতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
প্রতিবেশী পেরু সীমান্ত নিরাপত্তায় নতুন করে কঠোর আইন জারি করেছে, যা শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
ইকুয়েডর সরকারও সীমান্তে কড়াকাড়ি আরোপ করেছে। তারা গত সপ্তাহে নতুন একটি নির্দেশ জারি করে পাসপোর্ট ছাড়া ভেনেজুয়েলার কোনো নাগরিককে ইকুয়েডরে প্রবেশ করতে দেবে না বলে জানিয়েছিল। যা শনিবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও আদালতের নির্দেশে শুক্রবার শেষমুহূর্তে তা আটকে গেছে। আদালতের রায়ে বলা হয়, ওই নির্দেশ স্বাধীনভাবে চলাচলের আঞ্চলিক যে চুক্তি আছে তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি ভেনেজুয়েলীয় দেশ ছেড়েছে।
এদিকে, পেরু সীমান্তে নতুন আইন কার্যকর হওয়ায় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শত শত ভেনেজুয়েলীয় ইকুয়েডর–পেরু সীমান্তে আটকা পড়ে গেছে।
তাদের একজন জনাথন জামব্রানো (১৮) বলেন, ‘গত পাঁচ দিন ধরে আমি অন্যদের মত রাস্তায় আছি।’
শুক্রবার নতুন সীমান্ত আইন কার্যকরের আগে প্রায় আড়াই হাজার ভেনেজুয়েলীয় সীমান্ত পেরিয়ে পেরু প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন। গত কয়েক সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার ভেনেজুয়েলীয় ইকুয়েডর–পেরু সীমান্তে জড়ো হচ্ছে বলে জানায় বিবিসি। ইতোমধ্যে প্রায় চার লাখ ভেনেজুয়েলীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে পেরু। যাদের বেশিরভাগই গত বছর এসেছে।
শনিবার কার্যকর হওয়া নতুন আইনে পেরুতে প্রবেশ করতে হলে বৈধ পাসপোর্ট দেখাতে হবে। এরআগে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই ভেনেজুয়েলীয়দের প্রবেশ করে দেওয়া হত। এদিকে ভেনেজুয়েলার শরণার্থীদের ঢল নিয়ে ইকুয়েডরের নাগরিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কোন মন্তব্য নেই