ব্যবসা দক্ষিণ কোরিয়ায় বেকারত্বের হার রেকর্ড নিম্নে - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

ব্যবসা দক্ষিণ কোরিয়ায় বেকারত্বের হার রেকর্ড নিম্নে


দক্ষিণ কোরিয়ায় বেকারত্বের হার রেকর্ড নিম্নে পৌঁছেছে। কভিডজনিত বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় এমনটা ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও মূল উৎপাদন খাতগুলোতে এখনো শ্রমিক সংকট রয়েছে বলে প্রকাশিত এক তথ্যে দেখা যায়। খবর রয়টার্স।


আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার মৌসুম অনুযায়ী সমন্বিত বেকারত্বের হার নেমে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশে। গতকাল স্ট্যাটিসটিকস কোরিয়ার প্রকাশিত এক তথ্যে এমনটা দেখা যায়। ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো বেকারত্বের হার নির্ধারণ শুরু হওয়ার পর এটিই দেশটির জন্য সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার। আগস্টে ২ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসার ফলে টানা তিন মাসের মতো বেকারত্বের হার নিম্নগামী অবস্থায় রয়েছে। জুলাইয়ে এ হার ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ।


এক বছর আগের তুলনায় বর্তমানে দেশটিতে চাকরিজীবীর সংখ্যা বেড়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজারের মতো। জুলাইয়ে বিভিন্ন খাতে ৫ লাখ ৪২ হাজার কর্মসংস্থান যুক্ত হওয়ার পর এ উন্নতি দেখা দিয়েছে। নতুন সৃষ্ট এসব কর্মসংস্থানের অধিকাংশই হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক পরিষেবা, নির্মাণ, পরিবহন এবং গুদামজাতকরণ খাতে। স্ট্যাটিসটিকস কোরিয়ার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটা দেখা যায়।


বেকারত্বের হার হ্রাস পাওয়ার পরও দক্ষিণ কোরিয়ার মূল উৎপাদন খাতগুলোতে শ্রমিক সংকট বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমানে উৎপাদন খাতে কর্মীর সংখ্যা আট বছরের সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এ খাতে শ্রমিকের সংখ্যা ২০২০ সালে ৭৬ হাজার থেকে কমে বর্তমানে ৪২ লাখ ৮৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে।


দক্ষিণ কোরিয়ার পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক কর্মকর্তা বলেন, বিস্তারিত বলতে গেলে এখানে অটোমোবাইল ও ট্রেলার শিল্পে কর্মসংস্থানের ঘাটতি ছিল। একই সঙ্গে বস্ত্র উৎপাদন খাতেও কর্মসংস্থানের অবনতি দেখা দেয়। পাশাপাশি ইলেকট্রনিকস সম্পর্কিত উৎপাদন খাতেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার নেতিবাচক অবস্থানে যেতে থাকে। দক্ষিণ কোরিয়ার খুচরা বিক্রয় খাতেও কর্মসংস্থান হ্রাস পেতে থাকে। দেশটিতে এ খাতে এক বছর আগের তুলনায় ১ লাখ ১৩ হাজার কর্মসংস্থান হ্রাস পায়। আবাসন ও রেস্তোরাঁ খাতেও ৩৮ হাজার কর্মসংস্থান ঘাটতি দেখা যায়।


কোরিয়া ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো লি সেইউং-সুক বলেন, বেকারত্বের হার কমে আসার ব্যাপারটি আসলেই খুব ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু এখনই এটা বলাটা অতিরিক্ত হবে যে, কর্মসংস্থানের বাজার দৃঢ়ভাবে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। শুধু বেকারত্ব হ্রাসের হার দিয়েই আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।


সপ্তাহে ৩৬ ঘণ্টার কম সময় কাজ করা কর্মীর সংখ্যা এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ৬৪ দশমিক ৫ শতাংশ। মূলত কম বেতন ও নিম্ন পদের কর্মীদের কর্মঘণ্টার ক্ষেত্রে এ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অন্যদিকে যারা লম্বা সময় ধরে কর্মঘণ্টা ব্যয় করে তাদের পরিমাণ ১৭ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।


দক্ষিণ কোরিয়ার তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে। আগস্টে ১৫-২৯ বছর বয়সীদের বেকারত্বের হার ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে একই সময়ে এ বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের মূল হার (এক্সপানডেড আনএমপ্লয়মেন্ট রেট) ছিল ২১ দশমিক ৭ শতাংশ। বেকারত্বের মূল হারে অস্থায়ী কর্মী, চাকরির আশা ছেড়ে দেয়া তরুণ ও রাষ্ট্রীয় চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।


ব্যাংক অব কোরিয়ার বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর শেষে দেশটিতে বেকারত্বের হার দাঁড়াবে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী বছরের জন্য বেকারত্বের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

কোন মন্তব্য নেই