সুইফটের বিকল্প হতে পারে চীনা সিআইপিএস, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা রাষ্ট্রগুলো। এতে অর্থনৈতিক হুমকিতে পড়তে পারে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণে চীনের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে রুশ সরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
ক্যাপিটাল ইকোনোমিকসের অর্থনীতিবীদ মার্ক উইলিয়ামসের মতে, রাশিয়ার ওপর দেওয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব দেশটির সঙ্গে চীনা নীতির ওপর পড়েছে।
অনেকেই বলছেন, সুইফট থেকে বের দেওয়ায় এখন রাশিয়ার বিকল্পনীতি হতে পারে চীনা সিআইপিএস। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের মতে, সুইফটের তুলনায় সিআইপিএস অনেক ছোট। এতে মাত্র ৭৫টি ব্যাংক অংশগ্রহণ করেছে। অন্যদিকে, সুইফট ব্যবস্থায় আছে ১১ হাজারের বেশি ব্যাংক। অন্তত ৩০০টি রুশ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান আছে এতে। অন্যদিকে, সিআইপিএসে রুশ প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র ২ ডজন।
এ প্রসঙ্গে উইলিয়ামস জানান, সিআইপিএস ব্যবস্থায় শুধু চীনা মুদ্রায় লেনদেন হয়। আপাতত যা শুধু চীনের জন্য কাজ করছে। অন্যান্য রাষ্ট্র সুইফট রেখে এতে অভ্যস্ত হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বিশেষ করে যেখানে ডলারের লেনদেন হয়না সেখানে সমস্যায় পড়তে পারে অনেকে।
বিশ্লেষদের মতে, ইউক্রেন ইস্যুতেই দেখা যাবে যে, রাশিয়া ও চীন পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা সত্য কি না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফেদেরিকো গুইলানি বলেন, চলমান ইউক্রেন সংকটে তথাকথিত বহু বন্ধু রাষ্ট্রের কার্যক্রম দেখেছে বিশ্ববাসী। রাশিয়া যখন ইউক্রেনে অভিযান শুরু করলো তখন চীনের ওপর ভরসা করেই করেছে। কারণ চীন হলো রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদ্বার। ২০২০ সালে দুই দেশ ১১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য করেছে। কিন্তু ইউক্রেন ইস্যুতে মস্কোকে সমর্থন প্রদানে চীনা সরকারকে ইতস্তত দেখাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন সংকটে খুব আঁটসাঁট পরিস্থিতিতে আছে চীনা নেতারা। গত মাসে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়েং ওয়েনবিন বলেন, প্রত্যেকটি স্বাধীন দেশের ভূখণ্ডকে সম্মান ও এর রক্ষা করতে হবে। একটি দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য দেশের ক্ষতি সাধনের বিষয়টি বিশ্বাস করে না চীন।
এর কিছুদিন পর গত ১ মার্চ চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুবেলার সঙ্গে ফোনালাপ করেন। এসময় ইউক্রেন সংকট নিয়ে দেশটির নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ওয়াং ই। অস্ত্রবিরতির বিষয়ে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানান তিনি।
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় অর্থনৈতিক ক্ষতিতে পড়তে পারে দেশটি। এই সংকট নিরসনে খুব শিগগির কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না চীন, বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, রাশিয়াকে সাহায্য করবে চীন। তবে তা খুব দ্রুত হচ্ছে না। সম্ভবত দীর্ঘ মেয়াদে গ্যাস ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই