ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় পদক্ষেপ - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় পদক্ষেপ

 

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় পদক্ষেপ: ৩০ শিক্ষক-কর্মকর্তা বরখাস্ত, ৩৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪০

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বড় ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ জন শিক্ষক ও ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তাঁদের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত আসে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায়। বিষয়টি শনিবার রাতে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক


তদন্ত ও সিদ্ধান্তের পটভূমি

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে গত ১৫ মার্চ পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেন ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক।

লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, ভিডিওচিত্র, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনসহ নানা তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়
পরে তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।


বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক বলেন,

“সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, তবে এখনো রেজল্যুশন তৈরি হয়নি। অফিসিয়ালি চিঠি পাঠানোর পর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।”

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আকতার হোসেন জানান,

“উপাচার্যের নির্দেশে আমরা দায়িত্ব পালন করেছি। লিখিত অভিযোগ, ছবি ও প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করেই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন,

“জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে শাস্তির মাত্রা নির্ধারণে আরেকটি কমিটি কাজ করবে। ফ্যাসিস্ট কার্যকলাপের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”


শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া ও আন্দোলন

আইন বিভাগের দুই শিক্ষক শাহজাহান মণ্ডল ও রেবা মণ্ডলকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল দুপুরে মানববন্ধন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
তাঁরা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে “অযৌক্তিক ও পক্ষপাতমূলক” বলে উল্লেখ করেন এবং উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন,

“তদন্ত কমিটি রাঘববোয়ালদের বাদ দিয়ে চুনোপুঁটিদের ধরছে। সিদ্ধান্তটি পক্ষপাতদুষ্ট।”

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মির্জা আল শাহরিয়ার বলেন,

“রেবা মণ্ডল ও শাহজাহান মণ্ডল সব সময় শিক্ষার্থীবান্ধব ছিলেন। আমরা তাঁদের শ্রেণিকক্ষে ফেরত চাই।”

ইংরেজি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের পক্ষে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।


 সারসংক্ষেপ

  • ১৯ শিক্ষক ও ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

  • ৩৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত

  • জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তদন্তের ফল

  • মানববন্ধন ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক

কোন মন্তব্য নেই