বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্লেষণের আওতায়, সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে তদন্তে নামছে বিসিবি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্লেষণের আওতায়, সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে তদন্তে নামছে বিসিবি
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ১১:২১
খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পরপর কয়েকটি সিরিজে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও দলীয় কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। এবার এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিসিবির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, গত এক বছরে জাতীয় দলের নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় দলের কোচ, অধিনায়ক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
একজন বিসিবি পরিচালক বলেন,
“দলের যেভাবে লেজেগোবরে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে কিছু বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কে, কেন, কীভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে—এটা এখন বোর্ডের জানার সময়।”
নুরুল নয়, কিপিংয়ে কেন জাকের?
আফগানিস্তানের বিপক্ষে শারজায় অনুষ্ঠিত টি–টোয়েন্টি সিরিজে দলে থাকা সত্ত্বেও উইকেটকিপিং করেননি নুরুল হাসান সোহান। ওই দায়িত্ব নেন অধিনায়ক জাকের আলী। বিষয়টি নিয়ে বিসিবির ভেতরেই প্রশ্ন ওঠে—সিদ্ধান্তটা কার?
সূত্র জানায়, লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে জাকের নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্টাম্পের পেছনে থাকবেন। তাঁর যুক্তি ছিল—কিপিং করলে দল পরিচালনায় সুবিধা হবে। তবে সহকারী কোচ সালাউদ্দিন নুরুলকে দিয়ে কিপিং করানোর পক্ষে ছিলেন।
মিরাজের অধিনায়কত্বেও প্রশ্ন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও দেখা গেছে অদ্ভুত কিছু সিদ্ধান্ত। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শেষ ওভারে পাঁচ রান দরকার থাকা অবস্থায় বোলিং দেন অকেশনাল বোলার সাইফ হাসানকে। অথচ চারজন বিশেষজ্ঞ স্পিনারের বোলিং কোটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল ৪৮তম ওভারে।
আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবুধাবি ওয়ানডেতে দারুণ পারফরম্যান্সের পরও (৪ ওভারে ৬ রান ও ৩ উইকেট) সাইফকে ৩৮তম ওভারের পর বোলিংয়ে না আনা নিয়েও বিসিবির অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠেছে।
রিশাদকে ৯ নম্বরে পাঠানো নিয়েও সমালোচনা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টাই হওয়া ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান রিশাদ হাসানকে পাঠানো হয় ৯ নম্বরে। অথচ তিনি ১৪ বলে ৩৯ রান করে প্রমাণ করেন, তাঁকে আগে নামানো হলে ফলাফল অন্যরকম হতে পারত।
বোর্ডে নজরদারিতে সাবেক ক্রিকেটাররা
জাতীয় দলের অস্থিরতা কমাতে এবং ভবিষ্যতের সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা আনতে বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চার ক্রিকেটারকে সরাসরি তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সহসভাপতি ফারুক আহমেদ, খালেদ মাসুদ ও আবদুর রাজ্জাক।
উপসংহার:
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন যেন আতশি কাচের নিচে। মাঠের ভেতরের ভুল সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনার জটিলতা—সবকিছুই এখন পর্যালোচনায়। বিসিবি আশাবাদী, সঠিক বিশ্লেষণ ও পদক্ষেপের মাধ্যমে দল আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।
কোন মন্তব্য নেই