ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করুন আমাদের সঙ্গে নয় জারিফ
মার্কিন সরকারের অর্থনৈতিক সন্ত্রাস এবং স্বাস্থ্য ও ওষধ-সন্ত্রাস বন্ধ করতে বিশ্ব-সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ।
কোমারসান্ট নামের একটি রুশ দৈনিকে লেখা এক প্রবন্ধে এ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
'ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করুন, আমাদের সঙ্গে নয়' শীর্ষক এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, বসে থেকে মার্কিন সরকারের মোড়লীপনা দেখার দিন শেষ হয়ে গেছে।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও লিখেছেন, বিশ্ব-সমাজের পক্ষ থেকে ইরান-বিরোধী অন্যায় ও অবৈধ নিষেধাজ্ঞাগুলোর বিরোধিতা জাগ্রত বিবেকের জন্য পরীক্ষা এবং মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্বের দেশগুলোর অবিচল থাকার মাধ্যম হবে।
ইরানের ওপর মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞাগুলো যে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দৃষ্টান্ত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই মার্কিন সরকারের এই জঘন্য প্রকৃতি তুলে ধরার জন্য এ বিষয়ে গণমাধ্যম বা প্রচার মাধ্যম ব্যবহারের কূটনীতিকে ব্যবহার করাসহ নানা কৌশল কাজে লাগানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
অবৈধ নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেয়া না হলে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরান ও বিশ্ব-সমাজের পারস্পরিক সহযোগিতা সম্ভব হবে না।
মার্কিন সরকারের একদেশদর্শিতা ও বলদর্পিতা মোকাবেলা করাটা আসলে করোনাকে মোকাবেলা করার চেয়ে মোটেও কম জরুরি নয়। কারণ বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলে ছড়িয়ে-পড়া করোনা মোকাবেলার জন্যও এ বিষয়টি জরুরি হয়ে পড়েছে।
ইরান পৃথিবীর একমাত্র দেশ যে করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী এবং ওষুধ সহজে কিনতে পারছে না। অথচ বিশ্বে সাত লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং এরই মধ্যে ৩৩ হাজার মানুষ মারা গেছেন।
ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে জাতিসংঘ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দাবি সত্ত্বে হোয়াইট হাউজ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখবে বলে সম্প্রতি ঘোষণা করেছে এবং ওয়াশিংটন সম্প্রতি তেহরানের ওপর বেশ কয়েকটি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইরান করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অন্য অনেক দেশের তুলনায় বেশ সাফল্য অর্জন করলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে।
ইরানে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪,৬০৫ জন, মারা গেছেন ২,৮৯৮ জন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৪,৬৫৬ জন। আর
প্রসঙ্গত সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৬৬৯ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ হাজার ১৫১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯৯ জন।
বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৯ জন। এদের মধ্যে ৬ লাখ ৫ হাজার ৫২১ জনের অবস্থা স্থিতিশীল এবং ৩২ হাজার ৮৮৯ জনের অবস্থা গুরুতর।
এখন পর্যন্ত এ ভাইরাস সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩০ জন এবং মারা গেছেন ৩ হাজার ৮৮৯ জন।
কোন মন্তব্য নেই