আইফোন ১২তে যেসব নতুন ফিচার থাকছে
অ্যাপলের বহুল প্রতিক্ষীত ‘আইফোন ১২’ লঞ্চ করা হয়েছে। বাজারে ফাইভজি নেটওয়ার্ক সুবিধাযুক্ত নতুন চারটি মডেলের আইফোনের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাপল পার্ক থেকে ভার্চুয়াল ইভেন্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের নতুন ৪টি ডিভাইস উন্মোচন করে।
আইফোন ১২ সিরিজের মডেলগুলো হলো- আইফোন ১২, আইফোন ১২ মিনি, আইফোন ১২ প্রো এবং আইফোন ১২ প্রো ম্যাক্স। অ্যাপল জানায়, এই ফোনসেটের একটি নতুন ‘মিনি’ মডেল থাকবে, যেটির স্ক্রিন থাকবে ৫.৪ ইঞ্চি।
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক বলেন, ডাউনলোড ও আপলোডের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে ফাইভজি। আরও হাইকোয়ালিটি ভিডিও স্ট্রিমিং, আরও সংবেদনশীল গেমিং, যোগাযোগের মাত্রায় আরও নতুনত্বসহ অনেক পরিবর্তন আসবে এই প্রযুক্তিতে।
আর আইফোন ১২-এ নতুন পাঁচ ন্যানোমিটার প্রসেসে তৈরি এ১৪ বায়োনিক চিপ ব্যবহার করেছে অ্যাপল। ফলে আইফোন ১১ সিরিজের চেয়ে বেশি গতি এবং গ্রাফিক্স পাওয়া যাবে আইফোন ১২-এ।
কী ফিচার থাকছে নতুন আইফোন-১২তে?
চার্জারবিহীন ফোন
এই প্রথমবারের মতো আইফোনের সঙ্গে কোনো চার্জার অথবা হেডফোন দেওয়া হচ্ছে না। অ্যাপল জানিয়েছে, পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপেক্ষাকৃত বেশি দামি আইফোন ১২ প্রো মডেলে স্ক্রিনটি বড় থাকবে এবং কম আলোয় ছবি তোলার সুবিধার্থে নতুন সেন্সর ব্যবহার করা হবে।
সিরামিক শিল্ড
অ্যাপল জানিয়েছে, আইফোন ১২তে আগের মডেলগুলোর মতো ৬.১ ইঞ্চি (১৫.৫ সেমি) স্ক্রিন রয়েছে, তবে এখন জমকালো রঙের সেটগুলোর জন্য এলসিডির বদলে ওএলইডি প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। অ্যাপল বলছে, এর কারণে নতুন আইফোন আগের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি সরু করে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে তাদের জন্য।
তারা আরও জানিয়েছে যে নতুন সেটের স্ক্রিন বেশি রেজুলেশনের এবং এতে ডিসপ্লের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সিরামিক শিল্ড ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে হাত থেকে পড়ে যাওয়ার হিসেবে আগের চেয়ে চার গুণ বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে।
ডেপথ সেন্সর
অপেক্ষাকৃত বেশি দামি মডেলগুলোতে বড় আকারের ডিসপ্লে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সেগুলোকে নতুন করে ডিজাইন করা হয়েছে - আইফোন প্রোর স্ক্রিন ৫.৮ ইঞ্চি থেকে ৬.১ ইঞ্চি এবং প্রো ম্যাক্সের স্ক্রিন ৬.৫ ইঞ্চি থেকে ৬.৭ ইঞ্চি। এ ছাড়া এই সেটগুলোতে লিডার (লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং) স্ক্যানার সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর ফলে ফোনের আশপাশের পরিবেশের জন্য একটি ডেপথ ম্যাপ তৈরি হয়, যার ফলে কম আলোতে অটোফোকাস ছয় গুণ দ্রুততায় করা সম্ভব। এ ছাড়া অগমেন্টেড রিয়েলিটির কাজ করার জন্যও এই সেন্সর ব্যবহৃত হতে পারে, যদিও এই ক্ষেত্রে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
ফাইভজি
স্যামসাং ২০১৯ সালে গ্যালাক্সি এস ১০ ফোন বাজারে ছাড়ে যা ফাইভ জি নেটওয়ার্কে কাজ করে এবং এর পর হুয়াওয়ে, ওয়ান প্লাস ও গুগলও এই ধরনের ফোন বাজারে ছাড়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেসব ফোন সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ খুব একটা বেশি নেই। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের টমাস হাসন বলেন, অ্যাপল সাধারণত নতুন প্রযুক্তি বাজারে আনে না, তারা একটি প্রযুক্তি পরিপক্ব হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে এবং ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে সেই প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করে।
স্মার্ট স্পিকার
নিজেদের স্মার্ট স্পিকার হোমপড মিনির একটি নতুন ভার্সনও বাজারে ছেড়েছে অ্যাপল। এটি আরও ব্যাপক পরিসরের ভয়েস কমান্ড সমর্থন করে। পাশাপাশি এটিতে একটি হোম ইন্টারকম সিস্টেমও রয়েছে। অ্যাপলের প্রথম হোমপড ২০১৮ সালে বাজারে ছাড়া হয়, তবে এখন পর্যন্ত অ্যামাজন ও গুগলের স্পিকারের তুলনায় এটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
সূত্র-বিবিসি বাংলা
কোন মন্তব্য নেই