রাশিয়ার তেল ছাড়া কি টিকতে পারবে ভারত? যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে জ্বালানি নীতিতে বড় দ্বিধা - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

রাশিয়ার তেল ছাড়া কি টিকতে পারবে ভারত? যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে জ্বালানি নীতিতে বড় দ্বিধা

 

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

রাশিয়ার তেল ছাড়া কি টিকতে পারবে ভারত? যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে জ্বালানি নীতিতে বড় দ্বিধা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
 প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, বিকেল ৪:৩১

রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনায় যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের মুখে পড়েছে ভারত। আগস্টে ওয়াশিংটন ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন—ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ভারত শিগগিরই রুশ তেল কেনা বন্ধ করবে।

তবে পরদিনই দিল্লি জানায়, ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দেনিস আলিপভ বলেন, “রুশ তেল ভারতের অর্থনীতি ও জনগণের কল্যাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও স্পষ্ট জানায়, তেল আমদানির নীতি দেশটির অর্থনৈতিক স্বার্থ ও জ্বালানি নিরাপত্তার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয়, কোনো বিদেশি চাপের ভিত্তিতে নয়।

 রুশ তেল ভারতের অর্থনীতির কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত রাশিয়া থেকে ৫২.৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা তাদের মোট আমদানির প্রায় ৩৭ শতাংশ। এরপর রয়েছে ইরাক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।

তবে ভারত শুধু রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল নয়; যুক্তরাষ্ট্র থেকেও ৭.৭ বিলিয়ন ডলারের পেট্রোলিয়াম পণ্য কিনেছে তারা।


 ইউক্রেন যুদ্ধের পর রুশ তেলের উত্থান

২০২১–২২ সালে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি ছিল মাত্র ৪ মিলিয়ন টন। ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া তেলের দামে বড় ছাড় দেয়—ফলে ২০২৪–২৫ সালে সেই পরিমাণ বেড়ে ৮৭ মিলিয়ন টন ছাড়ায়।

গড়ে রুশ তেল ভারতীয় রিফাইনারিগুলোর জন্য ১০–১৪ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি হয়। এতে ভারত বছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করেছে।


 রুশ তেল বন্ধ হলে কী ঘটবে?

গবেষক পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ হলে বৈশ্বিক তেলের দাম বাড়বে, যা শুধু ভারতের নয়, সারা বিশ্বের আমদানি খরচ বাড়াবে।”

তাঁর মতে, রুশ তেলের কারণে ভারতীয় অর্থনীতি যেমন স্থিতিশীল রয়েছে, তেমনি এটি বৈশ্বিক তেলের দামও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করছে।

অন্যদিকে গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের প্রধান অজয় শ্রীবাস্তব বলেন,

“ভারতের রিফাইনারিগুলো ভারী অপরিশোধিত তেলের জন্য তৈরি, যেমন রাশিয়ার ইউরালস ব্লেন্ড। হালকা মার্কিন শেল তেল ব্যবহার করতে গেলে ব্যয়বহুল পরিবর্তন আনতে হবে।”


🇮🇳 ভারতের কৌশলগত দ্বিধা

ভারত এখন দুই দিকের চাপে—

  1. সস্তা রুশ তেল কিনে মার্কিন প্রতিশোধের ঝুঁকি নেওয়া,

  2. অথবা মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি দামে তেল কিনে অভ্যন্তরীণ খরচ বাড়ানো

এখন প্রশ্ন—ভারত কি রাশিয়াকে ছাড়া চলতে পারবে?
এই সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে ভারতের ভবিষ্যৎ জ্বালানি নীতি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার বাণিজ্যিক সম্পর্কের গতি।

কোন মন্তব্য নেই