বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন তিন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করল ভারত
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন তিন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করল ভারত, বাড়ানো হচ্ছে সিলিগুড়ি করিডোরের প্রতিরক্ষা বলয়
বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনটি নতুন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা, কৌশলগত দুর্বলতা রোধ করা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই ঘাঁটিগুলোর অবস্থান আসামের ধুবড়ি জেলার বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ, ও পশ্চিমবঙ্গের চোপড়া এলাকায়। ভারতের দাবি, এর ফলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিলিগুড়ি করিডোর বা ‘চিকেন নেক’ অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হয়েছে।
সিলিগুড়ি করিডোরটি ভারতের উত্তরবঙ্গের একটি সরু ভূখণ্ড—মাত্র ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত। এই করিডোর মূল ভারতের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যকে যুক্ত করে। চারদিকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীন ঘেরা এই অঞ্চলকে ভারত তার “সবচেয়ে সংবেদনশীল সামরিক করিডোর” হিসেবে বিবেচনা করে।
ইন্ডিয়া টুডে-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তন—বিশেষ করে চীনের সঙ্গে বিনিয়োগে ঘনিষ্ঠতা ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের উদ্যোগ—ভারতীয় বিশ্লেষকদের কৌশলগত উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তাদের মতে, এই পরিবর্তন আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যে নতুন মাত্রা আনতে পারে এবং সিলিগুড়ি করিডোরের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে।
ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন ঘাঁটিগুলোর মাধ্যমে দ্রুত মোতায়েন, লজিস্টিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা সমন্বয় আরও উন্নত করা যাবে।
বর্তমানে করিডোরের নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান করছে ভারতীয় সেনার ৩৩ কোর (ত্রিশক্তি কোর)। নিয়মিত যুদ্ধাভ্যাস, লাইভ-ফায়ার মহড়া ও টি-৯০ ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে তারা করিডোরের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ধরে রাখছে।
এ অঞ্চলের আকাশ প্রতিরক্ষা বলয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রাফাল যুদ্ধবিমান, বিভিন্ন মিগ ভ্যারিয়েন্ট, এবং ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্ট। এছাড়া তিন স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরাইলি এমআরএসএএম সিস্টেম এবং দেশীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র—একযোগে কাজ করছে সম্ভাব্য আকাশ হামলা মোকাবিলায়।
সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রায় ৮ হাজার ১৬০ কোটি রুপি বরাদ্দ দিয়েছে নতুন দুইটি আকাশ প্রতিরক্ষা রেজিমেন্ট স্থাপনে, যা উন্নত সিকার প্রযুক্তি ও ৩৬০ ডিগ্রি প্রতিরক্ষা কভারেজ দিতে সক্ষম হবে।
কোন মন্তব্য নেই