লাইফস্টাইল নয়, অপরিহার্য
উৎসব মানেই বাড়তি কেনাকাটা। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে যাওয়া। উৎসবকে রাঙিয়ে তুলতে পণ্য ও সেবার দামে বিশেষ ছাড় নিয়ে হাজির হয় ক্রেডিট কার্ড। প্লাস্টিক মানি বা ক্রেডিট কার্ড বিশ্বব্যাপী নগদ অর্থ বহনের বিকল্প মাধ্যমও হয়ে উঠেছে। উন্নত দেশগুলোয় প্লাস্টিকের এ কার্ড মানুষের পকেটে থাকছে জীবনের অনুষঙ্গ হিসেবে। তবে বাংলাদেশীদের কাছে ক্রেডিট কার্ড এখনো কেবলই ‘লাইফস্টাইল’ পণ্য। বিপুল সম্ভাবনা সত্ত্বেও ক্রেডিট কার্ড হয়ে উঠতে পারেনি দেশের মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে ৩৯টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্যু করা হয়েছে মোট ২১ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৩টি ক্রেডিট কার্ড। অর্থনীতির আকার, জনসংখ্যার পরিমাণ, ক্রয়ক্ষমতা ও মধ্যবিত্তের সংখ্যা বিবেচনায় নিলে বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা খুবই কম বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, দেশে ক্রেডিট কার্ডের বাজারের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিশেষ এ কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে নানা শর্ত, প্রতিবন্ধকতা ও ব্যবহারকারীদের অনভিজ্ঞতা এর বাজার সংকুচিত করে রেখেছে।
বিশ্বের ১২১টি দেশের জনসংখ্যা ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে র্যাংকিং তৈরি করেছে বৈশ্বিক অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যাটিস্টা’। এর তথ্যমতে, ১২১টি দেশের ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। সেখানে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। ১২১টি দেশের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও প্রাপ্তবয়স্কদের ৪ দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এমনকি নেপালেরও ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে নেপালের অবস্থান ১০৩তম। আর থাইল্যান্ডের ২২ দশমিক ৬১ শতাংশ মানুষের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে সবার শীর্ষে কানাডা। দেশটির প্রাপ্তবয়স্কদের ৮২ দশমিক ৭৪ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এ তালিকায় শীর্ষস্থানে থাকা অন্য দেশগুলোর মধ্যে জাপানের ৬৯ দশমিক ৬৬, সুইজারল্যান্ডের ৬৯ দশমিক ২১, দক্ষিণ কোরিয়ার ৬৮ দশমিক ৪৪, যুক্তরাষ্ট্রের ৬৬ দশমিক ৭ ও যুক্তরাজ্যের ৬৬ দশমিক ১১ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমানও মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জনসংখ্যার বিবেচনায় ক্রেডিট কার্ডের বাজার খুবই ছোট। তিনি বলেন, দেশে এত ব্যাংক, এত জনসংখ্যা। তার পরও ক্রেডিট কার্ডের যে সংখ্যা সেটি হতাশাজনক। ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) টিআইএন সার্টিফিকেট ও আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ শর্ত ক্রেডিট কার্ডের বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধ্যবাধকতার কারণে ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অনুসরণ করে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের নথিপত্র জমা দেয়ার শর্ত পূরণ করতে না পেরে অনেক গ্রাহকই কার্ড না নিয়ে ফিরে যান। ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ও লেনদেন বাড়ানো সম্ভব হলে দেশে কালো টাকার দৌরাত্ম্য কমে আসত। কারণ কার্ডে যেকোনো লেনদেন নজরদারি করা যায়।
দেশে ৪০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করলেও বাজারে সবার কার্ড জনপ্রিয়তা পায়নি। ক্রেডিট কার্ড বাজারের বড় অংশই চারটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মোট ক্রেডিট কার্ডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংকের। কার্ড সংখ্যা বিবেচনায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য ব্যাংকগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক ও বিদেশী স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। দেশের নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) মধ্যে ক্রেডিট কার্ড রয়েছে কেবল লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের। ক্রেডিট কার্ডের বাজারে এ প্রতিষ্ঠানের অবস্থান পঞ্চম। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডও বাজারে ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে অন্য ব্যাংকগুলোও নিজেদের ক্রেডিট কার্ডকে জনপ্রিয় করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছে।
ঈদসহ যেকোনো উৎসব উপলক্ষে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটায় আকর্ষণীয় ছাড়সহ বিভিন্ন অফার ঘোষণা করছে ব্যাংকগুলো। ক্রেডিট কার্ডকে জনপ্রিয় করে তুলতেই এসব অফার ঘোষণা করা হচ্ছে। আবার গ্রাহকদের মধ্যে ঘোষিত অফারগুলো বেশ সাড়াও ফেলছে। ফলে উৎসবের সময়ে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটাসহ লেনদেন বাড়ছে। তবে ক্রেডিট কার্ড এখন শুধু উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। বরং সারা বছরই বিশেষ এ কার্ডে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থের লেনদেন হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২২ সালে দেশে প্রায় ২ লাখ ক্রেডিট কার্ড বেড়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৪২। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ কার্ডের সংখ্যা ২১ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৩-এ উন্নীত হয়েছে। অনলাইনে কেনাকাটা, সেবার মাশুল পরিশোধ, দোকানে কেনাকাটা বাবদ পিওএস মেশিনে অর্থ পরিশোধ ও এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থ তুলতে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার হচ্ছে। দেশের পাশাপাশি বিশ্বের যেকোনো দেশে গিয়েও ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করা যাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে তোলা হয়েছে ২৭০ কোটি টাকা। ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা ও সেবার মাশুল বাবদ পিওএস মেশিনে ১ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশে পরিশোধ হয়েছে ২৬৯ কোটি টাকা। আর অনলাইনে কেনাকাটা বা ই-কমার্সে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৫৮৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। সব মিলিয়ে জানুয়ারিতে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে ৩৯ লাখ ৮৮ হাজার ১০৪টি। এসব লেনদেনের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জানুয়ারি শেষে ক্রেডিট কার্ডে গ্রাহকদের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা।
ক্রেডিট কার্ড বিপণনের ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষ অবস্থান বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডের। ব্যাংকটি মোট ৭ লাখ ৫০ হাজার ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে। এর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার কার্ড। গত ডিসেম্বর শেষে ক্রেডিট কার্ডে সিটি ব্যাংকের ঋণ স্থিতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সিটি ব্যাংকের প্রায় সাড়ে তিন লাখ ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ডধারী। সারা দেশে ব্যাংকটির ৩৩ হাজার ৬০৭টি পিওএস মেশিন রয়েছে।
জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড এখন আর লাইফস্টাইল পণ্য নয়। এটি দৈনন্দিন জীবনযাপনের অপরিহার্য একটি অংশ। এখনো আমাদের দেশের বড় অংশের মানুষের কাছে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের ভীতি আছে। এ কারণে দেশের অর্থনীতি ও জনসংখ্যার অনুপাতে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা খুবই কম। আমরা মানুষের মধ্যে সৃষ্ট সংশয় দূর করার চেষ্টা করছি।’
মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘দেশে ক্রেডিট কার্ড সংখ্যা ও ঋণ বিতরণের দিক থেকে সিটি ব্যাংকের অবস্থান সবার শীর্ষে। তবে এ শীর্ষস্থান নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো তৃপ্তি নেই। বরং আমরা সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ৫০ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের গ্রামগঞ্জে সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করার জন্য সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও সহায়তা দরকার। ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ শর্ত ক্রেডিট কার্ডের বাজার সম্প্রসারণে অন্তরায়।’
ক্রেডিট কার্ড বিপণনের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজার। ব্যাংকটির ক্রেডিট কার্ড ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। আর কার্ড সংখ্যার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড। বাজারে এ ব্যাংকের সক্রিয় ক্রেডিট কার্ড রয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার। কার্ডধারীদের মধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংকের ঋণ রয়েছে ৬৬১ কোটি টাকা। গ্রাহকসংখ্যার দিক থেকে চতুর্থ স্থানে থাকা ব্যাংক হলো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। বহুজাতিক এ ব্যাংকের সক্রিয় ক্রেডিট কার্ড সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকের ঋণের স্থিতি ৮৪০ কোটি টাকা। এছাড়া মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সক্রিয় ক্রেডিট কার্ড রয়েছে ১ লাখের কিছু বেশি। গ্রাহকদের কাছে ঋণ স্থিতির পরিমাণ ৪১৩ কোটি টাকা।
দেশের ৩৪টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) মধ্যে ক্রেডিট কার্ড রয়েছে শুধু লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের। বাজারে প্রতিষ্ঠানটির ক্রেডিট কার্ড বেশ জনপ্রিয়। দেশের বড় বড় ব্যাংকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ক্রেডিট কার্ড বিপণন করা লংকাবাংলার অবস্থান পঞ্চম। লংকাবাংলার সক্রিয় ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭৬। এ গ্রাহকের কাছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির ৪৭৭ কোটি টাকা ঋণ স্থিতি রয়েছে।
জনপ্রিয়তা বাড়লেও ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নিয়ে বাজারে বিশৃঙ্খলা ছিল। কোনো কোনো ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে ৩০ শতাংশেরও বেশি সুদ আদায় করত। এ অবস্থায় ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সুদ ও সার্ভিস ফি নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সুদ ২০ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়া হয়। ওই প্রজ্ঞাপনের পর দেশের সব ব্যাংকই ক্রেডিট কার্ডের সুদহার কমিয়ে এনেছে। এতে গ্রাহকের মধ্যে কার্ডভিত্তিক ঋণ সেবাটির জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।
দেশে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা প্রায় সব ব্যাংকেরই রয়েছে ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডের কার্ড সেবা। তবে এর বাইরে কয়েকটি ব্যাংক কার্ড সেবায় নতুনত্ব আনতে অন্য ব্র্যান্ডের কার্ডও নিয়ে এসেছে। যেমন সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স, প্রাইম ব্যাংক জেবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংকের ডিনার্স ক্লাব, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক নেক্সাস পে ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইউনিয়ন পে ইন্টারন্যাশনাল কার্ড সেবা দিচ্ছে।
দেশের ১৬ বছরের ঊর্ধ্বের যেকোনো নাগরিক ক্রেডিট কার্ড সেবা নিতে পারেন। তবে তার নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকতে হয়। পরিবারের অন্য কেউ উপার্জনক্ষম হলেও তার বিপরীতে কার্ড দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। আর এ কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ঋণ নেয়া যায়। কার্ডের ব্যবহার সহজ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকেরা নির্দিষ্ট পরিমাণ কেনাকাটা ও ঋণ নিতে পারেন। দেশে ইস্যু করা দ্বৈত মুদ্রার ক্রেডিট কার্ড বিদেশেও ব্যবহার করা যায়। এ কারণে টাকার পাশাপাশি ডলারেও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়ছে। দেশে-বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে হোটেল বুকিং, থাকা-খাওয়া, ভ্রমণ, বিমান ভাড়া, রেস্তোরাঁ ও কেনাকাটার বিল পরিশোধে মিলছে নানা ছাড় ও পয়েন্ট জেতার সুযোগ। ক্রেডিট কার্ডে নেয়া ঋণের বিপরীতে ৪৫ দিন পর্যন্ত কোনো সুদ পরিশোধ করতে হয় না।
অবকাঠামো সুবিধা না থাকায় বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের বড় অংশই এখনো রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোয় সীমাবদ্ধ। তবে ব্যাংকগুলো এখন জেলা শহরগুলোতেও কার্ড ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। জেলা শহরগুলোর মার্কেট ও হোটেল রেস্তোরাঁয় পিওএস মেশিনে বিল পরিশোধের সুযোগ খুবই কম। এটিকে ক্রেডিট কার্ডের বাজার সম্প্রসারণের অন্তরায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই