হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে প্রতি মাসে আয় ৩ লাখ টাকা - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে প্রতি মাসে আয় ৩ লাখ টাকা



 

হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে রেজার মাসিক আয় প্রায় ৩ লাখ টাকা। রেজাউল ইসলাম রেজা নামে এক উদ্যোক্তা নিজে ইনকিউবেটর মেশিন তৈরি করে তার মাধ্যমে বেইজিং হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। তার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুরে। তার দুটি ইনকিউবেটর মেশিনে ১৭০০ ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০।


তার এ সফলতার খবর পেয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্যোক্তারা এসে ইনকিউবেটর মেশিন তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সফল এ উদ্যোক্তা স্বপ্ন দেখছে প্রসেসিং প্লান্ট তৈরির মাধ্যমে হাঁস মোটাতাজা করে তার মাংস বাজারজাত করার।


রেজাউল ইসলামের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি জানান, প্রথমে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ করে শুরু করেছিলেন ছাগলের খামার। ছয় মাসের মধ্যে ১৫০টি ছাগলের মধ্যে ৭৫টি পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। লোকসান হয় আড়াই লাখ টাকা।


এরপর ইউটিউবে বেইজিং হাঁস সম্পর্কে জেনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কুড়িগ্রাম হাঁস প্রজনন কেন্দ্রে হাঁস না পেয়ে লালমনিরহাটে এক উদ্যোক্তার কাছ থেকে ২০০ ডিমপাড়া বেইজিং হাঁস কিনে আনেন। পরে ছাগলের শেড ব্যবহার শুরু করেন। হাঁসের চলাচলের জন্য দেড় একর জমিতে তিনটি বড় পুকুর তৈরি করেন।


এর মধ্যে ইউটিউবে বেইজিং হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর পদ্ধতি দেখে নিজেই উদ্যোগ নিয়ে ৩০০ বাচ্চা ফোটানোর মতো ইনকিউবেটর মেশিন উদ্ভাবন করেন।


রেজা জানান, প্রতিটি বাচ্চা উৎপাদনে খরচ হয় ৩০-৩৫ টাকা। তিনি তা বিক্রি করেন ৭২-৭৫ টাকায়। মাসে তার ১৩ হাজার বাচ্চা বের হয়। খরচ বাদ দিয়ে মাসে আয় হয় প্রায় ৩ লাখ টাকা। কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেট, চট্টগ্রাম, ভৈরব, হবিগঞ্জ, দিনাজপুর, লালমনিরহাট থেকে ক্রেতা এসে তার কাছ থেকে বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছে।


পাশাপাশি ৫০ একরের মতো দৈর্ঘ্যের তিনটি পুকুর থেকে বিনা খরচে তিনি বছরে ৫-৬ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। রেজার বাবা আব্দুল করিম জানান, ২০১৫ সালে আমি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করি। এরপর বাড়িতে এসে ছেলেকে নিয়ে ছাগলের খামার দেই। সেটাতে লস করার পর ছেলে বেইজিং হাঁস পালনে আগ্রহী হয়।


তার উদ্যোগের ফলে এখন আমাদের খামার অনেক বড় হয়ে গেছে। এখন এখানে চারজন লোকের কর্মসংস্থান ছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ৮-৯ জন লোক কাজ করেন। আমার চার সন্তানের মধ্যে রেজা সবার বড়। রেজাউল ইসলাম রেজা আরও জানান, আমার হাঁসের বাচ্চার ডিম তৈরির ইনকিউবেটর মেশিন দেখে তিন জেলায় গিয়ে আমি ইনকিউবেটর মেশিন তৈরি করে দিয়েছি।


এর মধ্যে রংপুর থেকে একজন আড়াই লাখ টাকা খরচ করে ১৫ হাজার বাচ্চার একটি, নীলফামারী থেকে তিন লাখ টাকা খরচ করে ১৩ হাজার বাচ্চার একটি এবং সিলেট থেকে একজন ১০ হাজার বাচ্চা ফোটানের মেশিন তৈরি করে দিয়েছি। এ উদ্যোক্তা অভিযোগ করেন, তার এই কাজে জেলা বা উপজেলা থেকে কোনো সহায়তা করা হয়নি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি এটি করেছেন। বেকার যুবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।



কোন মন্তব্য নেই