সহায়তা বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ দিচ্ছে আফ্রিকা
আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রধান ও কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেডি জানান, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর উচিত জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় প্রতিশ্রুত ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের অর্ধেক পরিমাণ সহায়তা আফ্রিকায় দেয়া। আগামী পাঁচ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় মহাদেশটির এ পরিমাণ অর্থসহায়তা প্রয়োজন। এ সহায়তা আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে আসবে। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের আগে এমনটা জানান শিসেকেডি।
সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আফ্রিকার দুর্দশার কথা তুলে ধরা নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে কম দায়ী হলেও মহাদেশটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শিসেকেডি জানান, জলবায়ু হুমকি মোকাবেলায় বৈশ্বিক যে প্রচেষ্টা তা সফল হবে না, যদি এ প্রচেষ্টা ১৩০ কোটি মানুষের মহাদেশে (আফ্রিকা অঞ্চল) সফল হতে না পারে। আফ্রিকার ৫৪টি জাতির কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বিশ্বব্যাপী নিঃসরিত কার্বনের মাত্র ৩ শতাংশ। সাধারণ আফ্রিকানদের জন্য এটি একটি অবাক করা সত্য বলে মন্তব্য করেন কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, এটা কোনো সর্বোচ্চ প্রত্যাশা নয় বরং যাত্রার শুরু। এর মাধ্যমে বিশ্বাস ও আস্থার সৃষ্টি হতে পারে। আফ্রিকা অঞ্চলে জলবায়ু হুমকি মোকাবেলা ও এ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার সহায়তা প্রসঙ্গে এমনটা বলেন তিনি। শিসেকেডি জানান, আগামী জলবায়ু সম্মেলনের আগেই এ পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হবে এবং তা আফ্রিকার উন্নতিতে ব্যয় হবে বলে আশা করছেন তিনি।
বিশ্বনেতারা এরই মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলা ও পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। দুই সপ্তাহের গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলন শেষে আফ্রিকা অঞ্চলের জন্য কী পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয় এটিই এখন দেখার বিষয়।
এরই মধ্যে আফ্রিকার কিছু দেশের নেতা এবং ক্যাম্পেইনাররা জলবায়ু হুমকি মোকাবেলায় প্রত্যাশিত অর্থের জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। তারা দাবি করছেন, এর আগে আফ্রিকা অঞ্চলের জন্য ১০ হাজার কোটি ডলারের যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তা কখনই পূরণ করা হয়নি।
আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট আকিনউমি আদেসিনা বলেন, আমাদের আর কোনো কারণ দরকার নেই। আমাদের এখন আরো বেশি অর্থ প্রয়োজন।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক গ্লোবাল সেন্টার অন এডাপশনের প্রধান নির্বাহী প্যাট্রিক ভারকুইজেন বলেন, আফ্রিকার বর্তমান পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে তাদের এখন ‘মানিয়ে নাও, নয়তো মরে যাও’ অবস্থা। জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব তা আফ্রিকার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে।
কপ২৬-এ নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্রিটিশ কর্মকর্তা অল শার্মা জানান, মাদাগাস্কারের মহিলারা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির ফলে কৃষিকাজ করতে অক্ষমতা ও একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রয়োজনগুলো অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, একই সঙ্গে বৈষম্যও কঠিন আকার ধারণ করেছে।

কোন মন্তব্য নেই