আগামী বছর ভারতের স্মার্টফোন বাজার ১০ শতাংশ বাড়বে - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আগামী বছর ভারতের স্মার্টফোন বাজার ১০ শতাংশ বাড়বে


ফাইভজি স্মার্টফোনের বাজারজাত ও গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে ২০২৩ সালে ভারতে এ খাত ১০ শতাংশ বাড়বে। সেই সঙ্গে দেশটিতে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন উৎপাদন হবে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গিয়েছে। খবর গ্যাজেটসনাউ।


ভারতে বর্তমানে ৬০ কোটির বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। আরো অনেক ব্যবহারকারী ফিচার ফোন থেকে স্মার্টফোনে স্থানান্তরিত হচ্ছে। তাই বিশ্লেষকদের ধারণা, শিগগিরই স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়বে। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, গ্রাহকদের ডিভাইস পরিবর্তনের চাহিদাই আগামী বছর বাজারকে প্রভাবিত করবে।


ভারতের বিভিন্ন শহরে এরই মধ্যে ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। ফাইভজি স্মার্টফোন খবর তৈরি করলেও ২০২২ সালে বাজারের মাত্র এক-তৃতীয়াংশে এর প্রভাব ফেলেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভারতের গ্রাহকদের কাছে ফাইভজির চাহিদা এখন বেশি। বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন অংশে ফাইভজি নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাই ধারণা করা যাচ্ছে, ২০২৩ সালে অনেকেই ফোরজি স্মার্টফোন পরিবর্তন করে ফাইভজিতে স্থানান্তরিত হবে।


কাউন্টারপয়েন্টের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় ২০২২ সালে স্মার্টফোনের বাজারজাত ৫ শতাংশ কমবে। গত তিন বছরের হিসাবে টানা দুবার এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে স্মার্টফোন বাজার। অন্যদিকে সরকারি পর্যায়ে স্মার্টফোন সংগ্রহ ও বিক্রি বাড়াতে সহায়তা করবে। রাজস্থান ২০২৩ সালে প্রদেশটির নারী অধিবাসীদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিতে ক্রয়ের টেন্ডার প্রকাশ করেছে।


গবেষণা বিশ্লেষক অঙ্কিত মালহোত্রা বলেন, আমাদের আশা আগামী বছর মুদ্রাস্ফীতির সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ আরো ভালো হবে। সেই সঙ্গে ২০২২ সালে যেসব গ্রাহক স্মার্টফোন কেনা থেকে বিরত ছিল ২০২৩ সালে তারাও নতুন স্মার্টফোন কিনবে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ভারতে স্মার্টফোন বাজার তেমন গতিতে এগোতে পারেনি। ২০২০ সালের কভিড-১৯ সংক্রমণ ব্যতীত ২০১৬-২১ পর্যন্ত দেড় গুণ গতিতে বাজার বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।


২০২২ সালে ভারতের স্মার্টফোন বাজার আশানুরূপ ফল অর্জন করতে পারেনি। কেননা বছরের শুরুতেই বিভিন্ন উপাদানের সংকট শুরু হয়। বছরের প্রথমার্ধে সরবরাহ চেইনের দুর্দশা কাটলেও গ্রাহকদের চাহিদা সেভাবে আর বাড়েনি। তবে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ২০২২ ছাড়া ভারতের স্মার্টফোন বাজার সবসময় ইতিবাচক অবস্থায় ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ভারতের বাজারে স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে ৪ কোটি ৪৬ লাখ ইউনিট, গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় যা ৬ শতাংশ কমেছে। ৯২ লাখ স্মার্টফোন বিক্রির মাধ্যমে ভারতের বাজারে শীর্ষস্থান শাওমির। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্যামসাংয়ের বিক্রি হয়েছে ৮১ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ভিভো ও অপোর বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৭৩ লাখ ও ৭১ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন। ৬২ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রির মাধ্যমে পঞ্চম স্থান আরেক চীনা ব্র্যান্ড রিয়েলমির। ক্যানালিসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।


ক্যানালিসের বিশ্লেষক সানিয়াম চৌরাসিয়া বলেন, সুখবর হচ্ছে উৎসব মৌসুম শুরু হওয়ায় গত প্রান্তিকের কয়েক সপ্তাহে চাহিদা চাঙ্গা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় এন্ট্রি-লেভেলের ডিভাইসের বাজার সংকুচিত হয়েছে। তবে মাঝারি থেকে উচ্চমূল্যের সেগমেন্টে বিক্রি বেশ চাঙ্গা ছিল। এতে অপোর ওয়ানপ্লাস ও ভিভোর আইকিউওওর মতো ব্র্যান্ড ভূমিকা রেখেছে।


ফাইভজি হ্যান্ডসেটও ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বলে জানান চৌরাসিয়া। তিনি বলেন, এন্ট্রি-লেভেলের ব্র্যান্ডগুলোও ফাইভজি সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে টেক্কা দিতে সবচেয়ে সাশ্রয়ী ফাইভজি স্মার্টফোন আনতে কাজ করছে গুগল ও জিও।


ভারত, চীনসহ প্রধান বাজারগুলোয় জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে স্মার্টফোন বিক্রি কমেছে। ক্যানালিসের বিশ্লেষক সানিয়াম চৌরাসিয়া বলেন, চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিক ও ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে স্মার্টফোন বাজার চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন ডিসকাউন্ট ও বান্ডেল প্রমোশনের আশায় হয়তো অনেক গ্রাহকই নতুন স্মার্টফোন ক্রয় পেছাচ্ছে। গত বছরের এ উৎসব মৌসুমে যে রকম স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছিল এবার তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীনে প্রলম্বিত লকডাউন, শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। এতে সেমিকন্ডাক্টর, ব্যক্তিগত কম্পিউটার (পিসি), এলসিডি প্যানেলসহ প্রায় সব ধরনের পণ্য ও শিল্প উপকরণ বিক্রি কমেছে।

কোন মন্তব্য নেই