চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে চিপবাজারে অস্থিরতা
টিএসএমসির প্রধান নির্বাহী সিসি ওয়েই বলেন, বিশ্বের দুটি পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা চিপবাজারকে ক্রমেই নাজুক ও বিকৃত করছে। ফলে বিশ্বায়নের সুবিধাগুলো মুছে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, কভিড-১৯ মহামারী ও ইউক্রেন যুদ্ধ চিপ সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করছে। তবে বর্তমানে শিল্পটি সবচেয়ে বড় যে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তা হচ্ছে ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। আগে আপনি একটি পণ্য তৈরি করতেন এবং এটি সমগ্র বিশ্বের কাছে বিক্রি করতে পারতেন। এখন কিছু পণ্য বিক্রির অনুমতি নেই। কিছু দেশ বলে যে আপনাকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না, আবার কেউ কেউ বলে যে আপনি শুধু নির্দিষ্ট (স্থানীয়) পণ্য ব্যবহার করতে পারেন।
চলমান পরিস্থিতি বিশ্বায়নের সমস্ত উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতাকে গ্রাস করেছে। এমনকি ধ্বংসের এ প্রক্রিয়া ভীষণ জোরালো। এ বাধাগুলো অতীতের মতো একটি মুক্ত অর্থনীতির সুবিধাগুলোকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করবে, যা সত্যিই খারাপ বলেই মনে করেন তিনি।
মূলত চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে নতুন সংকটজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন প্রতিষ্ঠানটি। যেমন আমেরিকান প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার কারণে এটি আর মার্কিন লাইসেন্স ছাড়া নির্দিষ্ট চীনা ক্লায়েন্টদের পরিষেবা দিতে সক্ষম নয়।
ওয়েই নেতৃস্থানীয় প্রযুক্তি শিল্প সমিতি মন্টে জেড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত স্থানীয় ফোরামে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকাডেমিক অধ্যাপকসহ কারিগরি ও সরকারি কর্মকর্তারা।
বর্তমান পরিস্থিতির সবচেয়ে ভীতিকর দিকটি হচ্ছে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগী মনোভাব হারানো। এখন যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে একত্রে কাজ করতে বলা হয় তবে তা সহজ নয়। পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতা অতীতে মানুষের জন্য অগ্রগতির চাবিকাঠি ছিল, যা এখন দুর্বল হয়ে পড়ছে। এটি ভালো লক্ষণ নয় বলেও জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা সম্প্রসারণে শতকোটি ডলার বিনিয়োগ করছে টিএসএমসি। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে আসার পরই তিনি এসব মন্তব্য করেন।
চীনের তৈরি চিপ ব্যবহার থেকে নির্ভরতা কমাতে স্থানীয় ও অন্যান্য বিদেশী চিপ কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন প্রণোদনামূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মার্কিন সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গত আগস্টে অ্যারিজোনার ফিনিক্সে ফ্যাব২১ নামে সেমিকন্ডাক্টর কারখানা নির্মাণ সম্পন্ন করেছে টিএসএমসি। এবার ২০২৪ সালের মধ্যে চিপ উৎপাদন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তারা।
কোন মন্তব্য নেই