পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের একীভূতকরণের রূপরেখা সরকারের কাছে প্রেরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের দুর্বল ইসলামী ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের রূপরেখা চূড়ান্ত করে শিগগিরই সরকারের কাছে প্রেরণ করবে। প্রেরিত চিঠিতে একীভূতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল এবং শেয়ারের ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক এই একীভূতকরণের আওতায় আসবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর চারটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
একজন চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকার খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে চিঠি পাঠাবে। তবে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন দাবি করেন, তার ব্যাংক বৈঠকে আমন্ত্রিত হয়নি এবং অন্যান্য দুর্বল ব্যাংকের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে। তিনি বলেন, "আমরা একীভূতকরণের পক্ষে নই এবং আমাদের বাদ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অনুরোধ করেছি, কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি।"
দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণ
গত জুনে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজি এবং আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এর ফরেনসিক নিরীক্ষায় এই ব্যাংকগুলোর দুর্বল আর্থিক অবস্থা প্রকাশ পায়। নিরীক্ষায় দেখা যায়, তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ পূর্বে দেখানো হয়েছে তার চেয়ে চার গুণ বেশি। এই ফলাফলের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পাঁচটি দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হলে এই ব্যাংকগুলোকে সাময়িকভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
তারল্য সহায়তা প্রত্যাখ্যান
বৈঠকে পাঁচটি ব্যাংক আবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তারল্য সহায়তার আবেদন জানায়, কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। একীভূতকরণের সময় নতুন কোনো তহবিল সরবরাহ করা হবে না।
এই পদক্ষেপটি অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। নতুন ‘ব্যাংক রেজোলিউশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫’ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সংকটাপন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করেছে।
কোন মন্তব্য নেই