ভারত–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তের পথে: কৃষি, জ্বালানি ও ট্যারিফে নতুন সমঝোতার ইঙ্গিত - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

ভারত–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তের পথে: কৃষি, জ্বালানি ও ট্যারিফে নতুন সমঝোতার ইঙ্গিত

 

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

ভারত–যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তের পথে: কৃষি, জ্বালানি ও ট্যারিফে নতুন সমঝোতার ইঙ্গিত


অনলাইন ডেস্ক || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বাণিজ্য চুক্তি আলোচনায় অবশেষে অগ্রগতির আভাস মিলছে। কৃষি, জ্বালানি ও শুল্ক (ট্যারিফ) সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে উঠতে উভয় দেশই এখন সমঝোতার পথে এগোচ্ছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

চুক্তির পথে প্রধান বাধা ছিল—ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে মার্কিন কৃষিজাত, ডেইরি ও জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) পণ্যের অধিক প্রবেশাধিকার চাওয়া। ভারত বরাবরই এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছিল, কারণ এ ধরনের অনুমতি দিলে দেশের কৃষিখাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একাধিকবার বলেছেন—“কৃষকদের স্বার্থে কোনো আপস হবে না।”

তবে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনায় জানা গেছে, ভারত এখন আমেরিকার নন-জিএম কর্ন (ভুট্টা)সয়মিল (সয়াবিনজাত পণ্য) আমদানির পরিমাণ বাড়াতে প্রস্তুত। বর্তমানে আমেরিকা থেকে নন-জিএম কর্ন আমদানির কোটা বছরে ৫ লাখ টন, সেটি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে।

চীনের ভূমিকাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। ২০২২ সালে চীন ৫২০ কোটি ডলারের মার্কিন কর্ন আমদানি করলেও ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৩ কোটি ডলারে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন নতুন বাজার খুঁজছে—আর ভারত সেই সুযোগ নিচ্ছে।

ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারেও পোল্ট্রি ফিড, ডেইরি ইনপুট ও ইথানলের মতো বিকল্প জ্বালানির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। এসব কারণেই ভারত আমেরিকার জন্য বাজার খুলে দিতে আগ্রহী।

তবে মার্কিন পক্ষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি হলো—ভারতে উচ্চমানের চিজ ও ডেইরি পণ্যে শুল্ক কমানো। এ বিষয়ে দিল্লির অবস্থান এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।

দিল্লি ও ওয়াশিংটন উভয় পক্ষ থেকেই ইঙ্গিত মিলছে, চুক্তির একটি ব্রড আউটলাইন তৈরি হয়ে গেছে। তবে কৃষি ও জ্বালানির মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতে রাজনৈতিক ছাড়পত্র মিললেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা অজয় কুমার শ্রীবাস্তব মনে করেন, চুক্তি বাস্তবায়িত হলে তাতেও চীনের একটি পরোক্ষ প্রভাব থাকবে। “চীন যেভাবে রেয়ার আর্থ রফতানি নিয়ন্ত্রণ করছে, তাতে আমেরিকা বিকল্প সাপ্লাই চেইন গড়তে বাধ্য হচ্ছে, আর ভারতের জন্য এটি একটি কৌশলগত সুযোগ,” বলেন তিনি।

তিনি আরও অনুমান করেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের জন্য ১৬–১৮ শতাংশ ট্যারিফ ব্র্যাকেট প্রস্তাব করতে পারে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (১৫%) থেকে কিছুটা বেশি হলেও ভিয়েতনামের (২০%) তুলনায় কম।

বর্তমানে ভারতের রফতানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে ৫০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, তার অর্ধেকই রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ‘পেনাল্টি’ হিসেবে ধরা হয়। এই ট্যারিফ যদি ১৫–১৬ শতাংশে নামানো হয়, তবে রাশিয়া-সংক্রান্ত জরিমানা ও পাল্টা ট্যারিফ—দুটিই প্রত্যাহার করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা কমালে বা বিকল্প উৎস বাড়ালেই ভারত এই সুবিধা পেতে পারে—এবং তাতে ভারত–মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই