দীর্ঘ বিরতির পর একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া, উদ্বেগ বাড়ল এপেক সম্মেলন ঘিরে
দীর্ঘ বিরতির পর একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া, উদ্বেগ বাড়ল এপেক সম্মেলন ঘিরে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দীর্ঘ বিরতির পর আবারও একাধিক স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে দেশটির পূর্ব উপকূলীয় জলসীমা লক্ষ্য করে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়,
“আমরা একাধিক বস্তু শনাক্ত করেছি, যা স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। এগুলো পূর্ব সাগর (জাপান সাগর নামেও পরিচিত) অভিমুখে নিক্ষেপ করা হয়েছে।”
সিউলের কর্মকর্তারা জানান, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (২১৭ মাইল) পথ অতিক্রম করেছে। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান ঘনিষ্ঠভাবে নজরদারি ও তথ্য আদান-প্রদান করছে।
এই নিক্ষেপ এমন এক সময়ে ঘটল, যার মাত্র এক সপ্তাহ পরই দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়োংজু শহরে শুরু হতে যাচ্ছে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলন, যেখানে অংশ নেবেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, এবং বিশ্বের আরও শীর্ষ নেতারা।
বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, এপেক সম্মেলনের আগে বা চলাকালীন সময় উত্তর কোরিয়া উসকানিমূলক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে, যাতে তারা নিজেদের পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা জোরদার করতে পারে।
ইয়োনহাপ নিউজ জানায়, সর্বশেষ ৮ ও ২২ মে উত্তর কোরিয়া স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছিল। অর্থাৎ, এটি নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশটির প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন নতুন আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘হোয়াসং-২০’ প্রদর্শন করেন, যা দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত।
শাসক ওয়ার্কার্স পার্টির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সেই প্যারেডে চীন ও রাশিয়ার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, কিম জং-উনের এই প্রদর্শনী তার আঞ্চলিক কূটনৈতিক প্রভাব ও পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সংকেত বহন করে।
পিয়ংইয়ং দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অস্ত্র উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে এসব অস্ত্র তৈরি করা জরুরি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছর আবারও কিমের সঙ্গে দেখা করার আশা করছেন।
অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, কিম জং-উন আলোচনায় আগ্রহী, তবে পিয়ংইয়ং কোনো অবস্থাতেই পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না।
কোন মন্তব্য নেই