পিরামিড কি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল? নতুন গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
পিরামিড কি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল? নতুন গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ
হাজার বছর ধরে রহস্যে ঢাকা মিশরের পিরামিড নিয়ে এবার বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন এক অবাক করা তত্ত্ব। তাদের মতে, পিরামিডগুলো শুধু রাজকীয় সমাধি নয়, বরং হতে পারে প্রাচীন বিশ্বের প্রথম শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র!
দীর্ঘদিন ধরে ধারণা করা হয়, পিরামিডগুলো ফেরাউনদের মমি রাখার জন্য নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, পিরামিডের ভেতর থেকে কোনো মমি এখনো পাওয়া যায়নি। বরং অধিকাংশ মমি উদ্ধার হয়েছে ‘কিংস ভ্যালি’ বা রাজাদের উপত্যকা থেকে। এ ছাড়া, পিরামিডের দেয়ালে কোনো চিত্রলিপি বা দেয়ালচিত্রও নেই—যা অন্য রাজকীয় সমাধির ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়।
পিরামিডে বিদ্যুৎ উৎপাদনের তত্ত্ব
ইঞ্জিনিয়ার জন ক্যাডম্যানের তৈরি মডেল ও গবেষণায় দেখা গেছে, গিজার পিরামিডগুলো তড়িৎচুম্বকীয় শক্তি (Electromagnetic Energy) উৎপন্ন করতে পারতো। এই প্রক্রিয়াটি নিকোলা টেসলার বিখ্যাত ‘ওয়ারডেনক্লিফ টাওয়ার’-এর মতো, যা দিয়ে তিনি তারহীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
‘দ্য গিজা পাওয়ার প্ল্যান্ট: টেকনোলজিস অফ অ্যানসিয়েন্ট ইজিপ্ট’ বইয়ের লেখক ক্রিস্টোফার ডানও এই ধারণাকে সমর্থন করেন। তাঁর মতে, পিরামিডের ভেতরের কক্ষগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা ছিল যে, তা এক ধরনের জেনারেটর হিসেবে কাজ করতে পারতো।
টেসলার পিরামিড তত্ত্ব
নিকোলা টেসলার মতে, পিরামিড পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করতো। পিরামিডের ‘কিংস চেম্বার’ ও ‘কুইনস চেম্বার’-এর দেয়ালে ব্যবহৃত রোজ গ্রানাইটে থাকা কোয়ার্টজ ক্রিস্টাল বৈদ্যুতিক চার্জ তৈরি করতো। ভূগর্ভস্থ চেম্বারে প্রবাহিত জল শক ওয়েভ তৈরি করত, যা ক্রিস্টালের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে তড়িৎচুম্বকীয় শক্তি উৎপন্ন করতে পারতো।
হারানো ক্যাপস্টোনের রহস্য
পিরামিডের শীর্ষে থাকা কন্ডাক্টিভ ধাতব অংশটি—যাকে ‘ক্যাপস্টোন’ বলা হয়—আজ আর দেখা যায় না। গবেষকরা মনে করেন, এটি ঝড় বা চুরি হয়ে হারিয়ে গেছে। সেই ধাতব অংশটি থাকলে হয়তো পুরো পিরামিডই শক্তি প্রবাহের কেন্দ্রে রূপ নিত।
আধুনিক অনুসন্ধানে নতুন তথ্য
১৯৯৩ সালে পিরামিডের ভেতরে একটি ছোট গর্তের সন্ধান মেলে, যার ভেতর পরে আবিষ্কৃত হয় একটি লুকানো কক্ষ। ২০১১ সালে রোবোটিক ক্যামেরা ব্যবহার করে দেখা যায়, সেখানে হাইড্রোজেন গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে—যা তত্ত্ব অনুযায়ী শক্তি উৎপাদনের ইঙ্গিত দেয়।
শেষ কথা
যদিও এসব তথ্য এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়, তবে পিরামিডের ভেতরের নকশা ও কাঠামো আজও বিজ্ঞানীদের ভাবনায় ফেলে রেখেছে। প্রাচীন মিশরীয়রা ঠিক কতটা প্রযুক্তিগতভাবে অগ্রসর ছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর হয়তো এই রহস্যময় পিরামিডগুলোই একদিন জানাবে।
কোন মন্তব্য নেই