ঢাকাকেন্দ্রিক স্ট্রোক চিকিৎসায় ভোগান্তি, শয্যাসঙ্কটে বিপাকে রোগীরা - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

ঢাকাকেন্দ্রিক স্ট্রোক চিকিৎসায় ভোগান্তি, শয্যাসঙ্কটে বিপাকে রোগীরা

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

 ঢাকাকেন্দ্রিক স্ট্রোক চিকিৎসায় ভোগান্তি, শয্যাসঙ্কটে বিপাকে রোগীরা


 টাইমস এক্সপ্রেস ২৪

দেশজুড়ে স্ট্রোক রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়লেও কার্যকর চিকিৎসা এখনো ঢাকাকেন্দ্রিক। রাজধানীর বাইরে উন্নত চিকিৎসা না থাকায় জীবন বাঁচাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে রোগীদের। ফলে চিকিৎসা শুরুতে দেরি হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার পরিতোষ সাহার মেয়ে নিপা সাহা (১৬) স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে উন্নত চিকিৎসার আশায় পরিবারের সদস্যরা ১২ ঘণ্টা যাত্রা করে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিনস) হাসপাতালে পৌঁছান। কিন্তু শয্যাসঙ্কটে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি।

চিকিৎসকরা বলছেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে স্ট্রোক থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব। বর্তমানে আধুনিক ‘মেকানিক্যাল থ্রোমবেক্টমি’ চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে স্ট্রোকের মৃত্যুঝুঁকি ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হলেও দেশে এ চিকিৎসা এখনো সীমিত পরিসরে দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে নিয়মিতভাবে মেকানিক্যাল থ্রোমবেক্টমি হচ্ছে শুধু নিনস-এ। অল্প পরিসরে এ চিকিৎসা দেওয়া হয় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কল্যাণপুর)

নিনসের স্ট্রোক ও ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু বলেন,

“স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রতিটি মিনিটই মূল্যবান। যত দ্রুত বন্ধ রক্তনালি খুলে দেওয়া যায়, তত বেশি মস্তিষ্কের কোষ বাঁচানো সম্ভব। সফলভাবে মেকানিক্যাল থ্রোমবেক্টমি করা রোগীদের ৫০ শতাংশ পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যায়।”

তিনি জানান, পূর্বে ৬ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা কার্যকর মনে করা হলেও সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ১৬ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও অনেক ক্ষেত্রে এ চিকিৎসা সফল হতে পারে।

গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি এক হাজারে প্রায় ১৩.৬ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত, যার মধ্যে ২৩ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের নিচে
অর্থাৎ, প্রতি চারজন স্ট্রোক রোগীর একজনই তরুণ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন,

“চাপের জীবনযাত্রা, ফাস্টফুড, ব্যায়ামের অভাব, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ—এই কারণগুলো স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তরুণদের মধ্যে রাত জাগা ও অনিয়মিত জীবনধারা সমস্যাকে আরও বাড়াচ্ছে।”

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন,

“ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে স্ট্রোক চিকিৎসায় ঘাটতি রয়েছে। এজন্য সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আট বিভাগীয় শহরে বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনায় স্ট্রোক চিকিৎসাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।”

আজ (২৯ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য—
‘প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ’।

কোন মন্তব্য নেই