রাজমিস্ত্রির জোগালী থেকে আলিমে জিপিএ-৫: দারিদ্র্যের দেয়াল ঠেলে এগিয়ে চলেছে সালমান
রাজমিস্ত্রির জোগালী থেকে আলিমে জিপিএ-৫: দারিদ্র্যের দেয়াল ঠেলে এগিয়ে চলেছে সালমান
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
অভাবের তীব্র বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সালমান ফারসী বুলু প্রমাণ করেছেন—দৃঢ় ইচ্ছা থাকলে অসম্ভব কিছুই নয়। রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন এই মাদরাসা শিক্ষার্থী। তবে পরিবারের আর্থিক অনটনে তার স্বপ্ন এখন ঝুঁকির মুখে।
ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধণিরাম গ্রামের দিনমজুর আবেদ আলী ও দুলালী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে সালমান সবার ছোট। স্থানীয় শাহবাজার এ.এইচ ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা থেকে আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি জিপিএ-৫ অর্জন করেন।
সালমান বলেন, “নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বুঝেছিলাম, ফরম পূরণের টাকা না থাকলে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এক বছরের জন্য রাজমিস্ত্রির জোগালী হিসেবে ঢাকায় ও কুমিল্লায় কাজ করি। সেই টাকায় দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করি এবং জিপিএ-৫ পাই।”
তিনি আরও বলেন, “পরে আবার কাজ করে টাকা জমিয়ে আলিম পরীক্ষার প্রস্তুতি নেই। এবারও জিপিএ-৫ পেয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন দেখি।”
দারিদ্র্যের মধ্যে ছেলেকে পড়াতে মা দুলালী বেগম খড়ের গাদা বিক্রি করেছেন ৮ হাজার টাকায় এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন ২০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, “ছেলেটা অনেক মেধাবী। ওর স্বপ্ন যেন অর্থের অভাবে থেমে না যায়—এই দোয়াই চাই।”
সালমানের ভাই দুলু মিয়া বলেন, “আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি তাকে পড়াতে। তবে বড় কিছু করতে চাইলে সমাজের সহযোগিতা দরকার।”
মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম মিয়া বলেন, “সালমান এক অনন্য উদাহরণ। তার মতো অদম্য মেধাবী ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো সমাজের দায়িত্ব।”
সালমানের ইচ্ছে, ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এবং একদিন পরিবারের দুঃখ দূর করা।

কোন মন্তব্য নেই