অর্থ পরিশোধে ধীরগতি, আবারো বকেয়ার ফাঁদে বিদ্যুৎ খাত

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
অর্থ পরিশোধে ধীরগতি, আবারো বকেয়ার ফাঁদে বিদ্যুৎ খাত
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ০৪:০০
দেশের বিদ্যুৎ খাত আবারো বকেয়ার চক্রে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গত কয়েক মাসে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করলেও বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর কাছে বিপিডিবির (বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড) বকেয়া এখন ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদকরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে নিয়মিত বিল পরিশোধ না হওয়ায় কেন্দ্রগুলো ঋণ পরিশোধ ও জ্বালানি ক্রয়ে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে। ফার্নেস অয়েলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর বকেয়া ৬–৭ হাজার কোটি টাকা, বাকিটা কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের।
বিপিডিবির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“বিল পরিশোধ হচ্ছে, তবে বকেয়ার পরিমাণ অনুযায়ী সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভর্তুকি ছাড়ের ওপর নির্ভর করছে।”
২০২৪–২৫ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা করা হলেও, চলতি অর্থবছরে তা কমে ৩৭ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। ফলে আবারও বিল পরিশোধে চাপ তৈরি হয়েছে।
বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সংগঠন বিআইপিপিএ-এর সভাপতি ডেভিড হাসানাত বলেন,
“বিপিডিবির কাছে পাঁচ–ছয় মাসের বিল বকেয়া রয়েছে। ব্যাংক ঋণ পরিশোধে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ভর্তুকি ছাড়ের গতি বাড়াতে না পারলে সমস্যা আরও বাড়বে।”
বিশেষ বন্ডের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করা হলেও তাতে স্থায়ী সমাধান আসেনি। ইউনাইটেড পাওয়ার, এসএস পাওয়ারসহ বড় কোম্পানিগুলোর বিল বকেয়া পড়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা।
এসএস পাওয়ারের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইবাদত হোসেন ভূঁইয়া বলেন,
“গত জুন থেকে কোনো বিল পাইনি। এখন বিপিডিবির কাছে আমাদের পাওনা সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।”
বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট, যার বড় অংশই সরবরাহ করছে বেসরকারি কেন্দ্রগুলো। কিন্তু বিল বকেয়া থাকায় উৎপাদন অব্যাহত রাখা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কোন মন্তব্য নেই