কিংবদন্তি লেখক রকিব হাসান: সেবা প্রকাশনীর সোনালি যুগের অমর কারিগর
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
কিংবদন্তি লেখক রকিব হাসান: সেবা প্রকাশনীর সোনালি যুগের অমর কারিগর
বিনোদন ডেস্ক || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
বাংলা জনপ্রিয় সাহিত্য জগতের এক অনন্য নাম রকিব হাসান। সেবা প্রকাশনীর স্বর্ণযুগে যিনি একাই সৃষ্টি করেছিলেন পাঠকের নতুন প্রজন্ম—গড়ে তুলেছিলেন রহস্য, রোমাঞ্চ ও অনুবাদ সাহিত্যের এক নতুন ধারা। জনপ্রিয় ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের স্রষ্টা, এবং অগণিত অনুবাদ-রচনার মাধ্যমে যিনি কিশোরদের পাঠাভ্যাসে বিপ্লব এনেছিলেন।
লেখক অনীশ দাস অপু এক স্মৃতিকথায় তুলে ধরেছেন রকিব হাসানকে দেখা ও জানার অজানা দিকগুলো। তিনি জানান, “রকিব ভাই ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, খুঁতখুঁতে অথচ গভীরভাবে নিবেদিত একজন লেখক। কাজী আনোয়ার হোসেনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধ ছিল অপরিসীম, কারণ কাজীদার হাতেই তিনি গড়ে উঠেছিলেন।”
১৯৭৭ সালে মাসুদ রানা সিরিজের ‘কুউউ!’ বই দিয়ে লেখালেখির জীবন শুরু করেন রকিব হাসান। এরপর ‘ড্রাকুলা’ অনুবাদ করে পাঠককে চমকে দেন তিনি। পরবর্তীতে ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের মাধ্যমে তিনি সেবা প্রকাশনীর বিক্রির রেকর্ড গড়ে তোলেন। জানা যায়, ১৯৯৩ সালে মাত্র তিন মাসে তাঁর বই বিক্রির রয়্যালটি ছিল ৯২ হাজার টাকা, যা সে সময়ের তুলনায় অবিশ্বাস্য সাফল্য।
রহস্যপত্রিকা এবং সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ পথচলায় তিনি অনুবাদ করেন ‘মাই ইন্ডিয়া’, ‘মানবজন্তু’ (জেরাল্ড ডুরেলের ‘My Family and Other Animals’) সহ একাধিক জনপ্রিয় গ্রন্থ। তাঁর হাত ধরে রহস্যপত্রিকার পাঠকসংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যায়।
অনীশ দাস অপু জানান, “রকিব ভাই ছিলেন অকপট, হাস্যরসিক এবং নিখুঁত সম্পাদক। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম, পরে বুঝেছি—তিনি শুধু লেখক নন, লেখার কারিগর।”
জীবনের শেষদিকে তিনি পারকিনসনস ও আলঝেইমার্স রোগে ভুগছিলেন। অসুস্থতার সময় প্রায় কেউ তাঁর খোঁজ নেয়নি—এমন অভিমান নিয়েই তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সেবা প্রকাশনীর কিংবদন্তি এই লেখক চলে গেছেন নীরবে, তবে তাঁর সৃষ্টি আজও অমর। ‘তিন গোয়েন্দা’, ‘গরমের ছুটি’, ‘ড্রাকুলা’—এসব বই আজও তরুণ পাঠকের প্রিয় সম্পদ।

কোন মন্তব্য নেই